দিনাজপুরে কঠোর লকডাউনেও চলছে কিস্তি আদায় প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনায় সাধারণ মানুষ
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ১৫ জুন ২০২১ মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে ২১ জুন পর্যন্ত দিনাজপুর সদরে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
লকডাউন কর্যকরে বেশ জোরদার হতে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনকে। এদিকে দিন দিন বাড়ছে করোনার সংক্রমণ গত ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুরে ২৭৫ জন কোভিড -১৯ শনাক্ত এরমধ্যে সদর-১৯০ জন । অনেকটাই চোখ উপড়ে উঠার মত অবস্থা। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে এনজিও।
দিনাজপুরে লকডাউনের মধ্যেও চলছে এনজিওর কিস্তি আদায়। টাকা আদায়ের জন্য বাড়ি বাড়ি ধরনা দিচ্ছেন এনজিওকর্মীরা। এমনকি ঋণ আদায়ের জন্য গ্রাহকদের সঙ্গে জোর-জবরদস্তিও করা হচ্ছে।
ফলে ঋণ পরিশোধের চাপে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে থাকা পরিবারগুলো পড়েছে চরম বিপাকে।
জানা গেছে, দিনাজপুরে টি এম এস এস, ব্র্যাক, আশাসহ বেশ কয়েকটি এনজিও লকডাউনের মধ্যে ঋণের কিস্তি আদায় করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিস্তি আদায় করছে টি এম এসএস এনজিও। লকডাউনে কিস্তি নিতে আসছেন কেন জবাবে টি এম এসএস কর্মী মোঃ হেলাল জানান আমাদের কোন নির্দেশনা নাই বা আমরা প্রশাসন থেকে কোন প্রকার লিখত পাই নি যে কিস্তি নেওয়া যাবে না। তাই কিস্তি নিতে এসেছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে চাপাচাপি করে এনজিওর ঋণ আদায়ের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন লকডাউনের দিনগুলোতে জোর করে ঋণ আদায় কোনোভাবেই ঠিক হচ্ছে না। কিস্তির জন্য গ্রাহকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। আমরা সব এনজিও গুলোকে ফোন করে জানিয়েছি লকডাউনের দিন গুলোতে কিস্তি বন্ধ রাখতে । এর পর তারা যেহেতু লিখিত চাচ্ছে আমরা লিখিত দিব।
গ্রাহকদের অভিযোগ, এসব এনজিওর কর্মীরা বাড়ির ওপর এসে কিস্তির জন্য ধরনা দিচ্ছেন। চাপাচাপি ও জোরাজুরি করছেন। কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে অপমান করছেন। খবর মিলেছে শহর, গ্রাম ও শহরতলিতেও ঋণের কিস্তি আদায় করতে এনজিওকর্মীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
উপশহরের বাসিন্দা নুরুজ্জামান হীরা জানান কিস্তি আদায়কারীরা কিস্তি জোর পূবক নিচ্ছে। না দিতে পারলে অপমান করছে লকডাউনে অটোবাইক বের করেছি বলে দিনাজপুর পুলিশ লাইনে অটো আটক করে রেখে দিয়েছে পুলিশ। আজ আবার টি এম এস এস কিস্তি নিতে এসেছে কিস্তি দিতে পারবনা বলাতে অনেক অপমান করল আর অর্ধেক কিস্তি নিয়ে গেল।
লকডাউনের মধ্যে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ফলে এখন তারা কিস্তি দিতে পারছেন না। সবকিছু যখন সচল ছিল ঋণের কিস্তি তারা কখনো বকেয়া রাখেননি। কিন্তু দিনাজপুরে লকডাউনের কারণে তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই আয় বন্ধ। ফলে কিস্তি দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে লকডাউন মানছেন না এনজিওকর্মীরা। যেকোনোভাবেই হোক, কিস্তি চান তারা।
উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার হোসনের স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, আমার বাসায় আশা সমিতির কিস্তি আদায় হয়। আজ গুলনাহার আপা কিস্তি নিতে আসায় করোনা বাড়ছে বাসায় আসা যাবে না বললে, সে বাইরে বসেই কিস্তি আদায় করবে জানান। কিস্তি দিতে আসা মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি জ্ঞানবোধ খুবই কম বলে জানান রেজিয়া বেগম।
এদিকে আজ করোনায় বিরল-১৫, বিরামপুর-২৬,বীরগঞ্জ-২, চিরিরবন্দর -২, ফুলবাড়ী-১৪, হাকিমপুর-৪, কাহারোল- ৪, নবাবগঞ্জ -৫, পার্বতীপুর- ১৩), নতুন করে সুস্থ হয়েছে ৩১ জন ( বিরল-১, বিরামপুর-১, বীরগঞ্জ- ২, চিরিরবন্দর- ১, সদর- ২৪, পার্বতীপুর- ২) ২৪ ঘন্টায় সদর উপজেলায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট রোগী -৬৭১৮ জন, মোট সুস্থ -৫৭২৬ জন, মোট মৃত্যু-১৪৭ জন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।